আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ফ্রিজ একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে রয়েছে। এখন প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ বাড়িতে ফ্রিজে দেখা যায় ।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজের চাপে আমাদের দৈনিক হয়তো বাজারে যাওয়া সম্ভব হয়ে পড়ে না। তার জন্য আমরা সপ্তাহ একদিন বেশি করে বাজার করে সেটাই ফ্রিজে স্টোর করে রেখে, সারা সপ্তাহ ধরে চালিয়ে নেওয়া একটা কমন ব্যাপারে এসে পৌঁছেছে। দৈনন্দিন জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ হয়ে উঠেছে ঠিক মোবাইলের মত।
আজকে এই প্রতিবেদন আপনাদেরকে জানাবো যে আপনারা ফ্রিজ কিভাবে ব্যবহার করলে আপনাদের ফ্রিজের কারেন্টের বিল কম আসবে কারণ এসির মতন ফ্রিজ কিন্তু আমরা দিনে চালালাম রাতে বন্ধ করলাম বা রাতে চালালাম দিনে বন্ধ করলাম এরকম হয় না। ফ্রিজ কিন্তু আমাদের কন্টিনিউ ২৪ ঘন্টা চলতে থাকে সেই কারনে এর ব্যবহারের কিছু নিয়ম আজকে বলবো।
ফ্রিজে অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে কখনো দেখা যায় ফ্রিজ ঠান্ডা করে না, কখনো দেখা যায় ফ্রিজের ভেতরে প্রচুর জল জমে গেছে । আপনি কি জানেন এমন অনেক সমস্যা আছে যে সমস্ত সমস্যার কারণে ফ্রিজের বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। বিদ্যুৎ বিল বেশি আসার দুই ধরনের কারণ নিয়ে আজকে বলবো।
১. ফ্রিজের সমস্যা ২. ভুল ব্যবহার
আসন প্রথমে জেনে নিই ফ্রিজে কোন ধরনের সমস্যা হলে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসবে
১. ফ্রিজের ডোর গ্যাসকেট নষ্ট হলে ?
ফ্রিজের ডোর গ্যাসকেট নষ্ট হলে ফ্রিজের দরজা ভ্যাকুম হয়ে লাগেনা। যার ফলে ঠান্ডা বাইরে বের হয়ে যায় আর এই কারণে ফ্রিজের কম্প্রেসার অনবরত চলতে থাকে এমন হলে ফ্রিজের বিদ্যুৎ বিল অত্যধিক বেশি আসে , তাই এ ধরনের হলে ডোর গ্যাস্ট্রিক পরিবর্তন করুন
২. ফ্রিজের থার্মোস্ট্যার নষ্ট হয়ে গেলে
ফ্রিজের থার্মোস্ট্যার যদি নষ্ট হয়ে যায় তাহলে ফ্রিজ অনবরত চলতে থাকে কম্প্রেসার অনবরত ফ্রিজকে ঠান্ডা করতে থাকে। আর এই ধরনের হলে ফ্রিজে প্রচুর বরফ জমবে অতিরিক্ত বরফ দেখা মাত্র দ্রুত আপনার ফ্রিজের থার্মোস্ট্যাট পরীক্ষা করুন এবং সমস্যা থাকলে পরিবর্তন করুন। তাহলেই দেখবেন আপনার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ কমে গেছে।
৩. ফ্রিজের কম্প্রেসার রিফারেজেন্ট বা গ্যাস
ফ্রিজের কম্প্রেসার রিফারেজেন্ট সঠিক পরিমাণ না থাকলে কম্প্রেসার ফ্রিজকে ঠান্ডা করার জন্য কম্প্রেসার অনবরত চলতে হয় আর যার ফলে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে। এ ধরনের হলে সঠিক পরিমাণে গ্যাস রিফিল করে নিতে হবে তাহলেই বিদ্যুৎ বিল কম আসবে।
৪. ফ্রিজের দেয়ালে কোন ফাটল থাকলে
ফ্রিজের দেয়ালে কোন ফাটল থাকলে পরিষ্কার করার সময় যদি ফ্রিজে দেওয়াল ফেটে থাকে তাহলে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসবে এ ধরনের ফাটল দিয়ে ঠান্ডা বেরিয়ে যাবে যার ফলে কম্প্রেসার বেশি সময় ধরে চালু করবে এবং বিদ্যুৎ বিল বেশি আসবে। এই ধরনের যদি হয়ে থাকে তাহলে আতঙ্কিত না হয়ে অল্প পুডিং দিয়ে ফাটল গুলোর মুখ বন্ধ করে দিলেই ঠিক হয়ে যাবে।
এবার আসুন জেনে নিই যেই ভুলগুলোর কারণে ফ্রিজের বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে,
১. যেই কারণটি রয়েছে সেটি হচ্ছে ফ্রিজের দরজা বেশি বারবার খুললে, ফ্রিজের দরজা আপনি যতবার খুলবেন ততবার ঠান্ডা বাতাস বাইরে বের হয়ে যাবে তাই আপনাকে যতটা সম্ভব চেষ্টা করতে হবে ফ্রিজের দরজা না খোলার। বিশেষ করে বাচ্চাদের ফ্রিজ খোলা থেকে সাবধানে রাখতে হবে কারণ বাচ্চারা ফ্রিজের ঠান্ডা বাতাসে অসুস্থ হয়ে যাবে অপরদিকে এই বিদ্যুৎ বিলও বাড়বে ।
২. ডোর সঠিকভাবে লাগাতে হবে।
যে কারণটি রয়েছে সেইটি হচ্ছে ডোর সঠিকভাবে লাগাতে হবে। অনেক সময় ফ্রিজে অতিরিক্ত লোড দেওয়ার কারণে ফ্রিজের দরজা সঠিকভাবে লাগে না। যার কারণে বাইরের জলীয় বাষ্প ফ্রিজের ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভেতরের ঠান্ডা বাইরে বেরিয়ে যায়। এ সময় কম্প্রেসার অধিক সময় ধরে রান করে এবং যার ফলে বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে তাই ফ্রিজ বন্ধ করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন ডোর সঠিকভাবে লাগানো হয়।
৩. যে কারণটি রয়েছে সেটি হচ্ছে ফ্রিজের থার্মোস্ট্যাট অকারণে বাড়িয়ে রাখলে অনেক সময় নিজের অজান্তেই দেখা যায় ফ্রিজের পাওয়ার বাড়ানো থাকে। অনেক সময় বাচ্চারা বাড়িয়ে দেয় থার্মোস্ট্যাট বাড়ানো থাকলে ফ্রিজ অতিরিক্ত ঠান্ডা করতে থাকে। তাই বিদ্যুৎ বিল বেশি আসে এমন অবস্থা থেকে বেরনোর জন্য মাঝে মাঝে ফ্রিজের থার্মোস্ট্যাট লেভেল চেক করে নিতে হবে ।
৪. ফ্রিজ সঠিক জায়গায় রাখতে হবে
ফ্রিজ দেয়ালের সাথে রাখলে ফ্রিজের দেয়াল থেকেই বের হওয়ার জন্য খোলামেলা স্পেস না থাকলে ফ্রিজ অতিরিক্ত সময় রান করতে থাকে। তাই ফ্রিজের ডান এবং বাম পাশে খোলামেলা জায়গা থাকলে ভালো এতে বিদ্যুৎ বিল যেমন কম আসে তেমনি ফ্রিজ দীর্ঘদিন ভালো থাকে।

